ট্যাবুর নতুন ধরণ




আপনার কী মনে হয় না, ট্যাবু বিষয়টাকে বর্তমানে ভিন্ন আঙ্গিকে দেখার সময় এসেছে? হয়ত আপনি উত্তরে পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেবেন- আঙ্গিকটা আলোচনার বিষয়। ট্যাবু কী সেটা আমরা জানি, কিন্তু এ বিষয়ে নতুন কী আলাপ চান আপনি?

 

আমি কোন আলাপে আপনাদের ঢোকাতে চাইছি সেটা বলার আগে ট্যাবুর সংজ্ঞাটা একটু বলি- Encyclopaedia Britannica-তে বলা আছে-

‘The prohibition of an action based on the belief that such behaviour is either too sacred and consecrated or too dangerous and accursed for ordinary individuals to undertake.’

ফ্রয়েড তার টোটেম এবং ট্যাবু বইয়ে ট্যাবু নিজের সংজ্ঞাকে ছাপিয়ে কতদূর প্রভাব বিস্তার করেছে তা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন এভাবে-

‘Taboo has become the ordinary method of legislation in the communities affected by it and it has come to serve social purposes which are certainly more recent than taboo itself: such, for instance, are the taboos imposed by chiefs and priests for the protection of their own property and privileges.’

ফ্রয়েডের যুগটা বেশ পেছনে ফেলে এসেছি আমরা। একে নতুন আঙ্গিকে দেখার প্রয়োজন তৈরি হয়েছে। তাই ট্যাবুকে আরো একটু সামনে এগিয়ে সংজ্ঞায়িত করতে চাই এভাবে- 

ট্যাবু হচ্ছে আসলে সেসব বিষয় নিয়ে আলাপ বা কাজ যা সমাজের ক্ষমতাসীন থেকে শুরু করে একদম প্রান্তিক মানুষের কাছেও অস্বস্তিকর। যে আলাপ-কাজ মানুষ এড়াতে চায়। যে আলাপে-কাজে মানুষ বিব্রত হয়ে পড়ে। আর যে কোনো মূল্যে নিজের এ বিব্রত হওয়াটাকে মানুষ ঠেকিয়ে দিতে চায়। মানুষ বিশ্বাস করে, যা তার নিজের জন্যে বিব্রতকর, তা সমাজ ও অন্যদের জন্যেও বিব্রতকর। ফলে  যে সকল কাজ-আলাপ-চিহ্ন বিব্রত করে মানুষকে তাই ট্যাবু। এভাবে অস্বস্তি উৎপাদনকারী সমস্ত কিছুকে ট্যাবু গণ্য করে যে কোনো মূল্যে থামিয়ে দিতে চায় মানুষ এবং এ সম্পর্কে স্বেচ্ছা অজ্ঞত্বকে যত্নের সাথে লালন করে।

এখন আমাদের বাঙালি সমাজ ট্যাবু বলতেই ধরে নেয় যৌনতা, নারীর পিরিয়ড, স্যানিটারী ন্যাপকিন। এর কারণ, বাঙালির মনন পড়ে আছে আশির দশকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাঙালি এসবকে এখনো ট্যাবু ধরে নেয় এনজিও প্রপাগাণ্ডায় প্রভাবিত হয়ে। একটা সুবিধাভোগী শ্রেণী এসবকে ট্যাবু হিসেবে জিইয়ে রেখে এনজিওগুলোর কাছ থেকে বা নানান প্রতিষ্ঠান থেকে কিছু অর্থকড়ি কিংবা সুবিধা পায়। এ জন্য তারা নানানভাবে নিজেদের ভাইরাল করার চেষ্টায় থাকে।

অথচ এসব আলাপ আজকাল মোটেও ট্যাবু নয়। যৌনতা নিয়ে বাঙালি ভালই আলাপ করে। এ টপিকে আলাপ পছন্দও করে। যৌনতাকে মূল থিম হিসেবে রেখে যথেষ্টেরও বেশি সংখ্যায় রচিত সাহিত্য এর প্রমাণ। এমনকি টাকা থাকলে বাঙালি বিদেশ থেকে পতিতা এনে প্রকাশ্যে নাচায় এটাও আমরা জানি। আগে পরকিয়ার কথা শুনলে মানুষ চোখ বড় বড় করে ফেলত। এলাকার একটা ছেলে বা মেয়ে প্রেম করলে সেটা দীর্ঘদিন পর্যন্ত ঘরে ঘরে আলাপের বিষয় ছিল এখন আর এসব ঘটে না। এ বিষয়ে শুনলে শুধু নিরুত্তাপ কণ্ঠে বলে- ওঃ পরকিয়া? প্রেম? লিভ টুগেদার? এ আর এমন কী!

পিরিয়ড, স্যানিটারী ন্যাপকিন এসবও অনাহুত বিষয় না। যে সকল ঘরে নারীরা আছেন সেসব ঘরে মাসের বাজারের সাথে সেনিটারী ন্যাপকিনও কেনা হয়। গড়পড়তা সবার কাছেই এটা স্বাভাবিক বিষয়। দোকানে কিনতে গেলেও এক কালে যেমন কেউ কেউ গা টেপাটেপি করে হাসত এখন আর চলে না ওসব। যদিও কেউ কদাচিত গা টেপাটেপি করে দেখবেন তারা গোফ-বাল না গজানো কিশোরই কেবল। এদের ধর্তব্যে না নেয়াই ভাল। একদম আদিম সমাজেও এরা ছিল, আজ থেকে হাজার বছর পরও এ আবালরা থাকবে। এরা সমাজের দর্পন নয়।

তাহলে আমি আসলে কী বলতে চাচ্ছি? যৌনতা, নারীর পিরিয়ড, স্যানিটারী ন্যাপকিন যদি ট্যাবু না হয়ে থাকে তাহলে কোনটা ট্যাবু?

আজকাল স্পষ্টতই ট্যাবু হচ্ছে রাজনীতি, দুর্নীতি ও ধর্মবিশ্বাস। বাঙালির বিশাল একটি অংশের কাছে এসব ভয়ঙ্কর ট্যাবু। রাজনীতি নিয়ে বেশিরভাগ মানুষই আলাপ করতে চায় না। ধর্ম বিষয়েও না। আর দুর্নীতি বিষয়ে কথা বললে তো এদেশে অনেকেই বসের আক্রোশের স্বীকার হয়ে চাকরিটাই হারাবে বা এসিআর-এ লাল বাতি জ্বলবে। আমার আগ্রহ যেহেতু ধর্মে সেহেতু ধর্ম নিয়েই আলাপ করছি।  ধর্মের নানান বিষয় আশয় নিয়েও ট্যাবু তৈরি হয়েছে। যেমন- সুদ। সুদ বিষয়ে আলাপ করতে গেলে এমনকি ইসলাম পালনকারী অনেকেই আপনাকে অস্বস্তির সাথে থামিয়ে দেবে। তথাকথিত শিক্ষিত সমাজ হাসবে। তাচ্ছিল্য করবে। এরকম আরও অনেক কিছুই আছে যার ট্যাবুর পর্যায়ে চলে গেছে। আমি সংক্ষেপে সার্বিকভাবে ধর্মের ওপরই চোখ রাখছি।

বাঙালি খুব ভাব নিয়ে কথাবার্তায় স্রষ্টা, ঈশ্বর এসব বলে। কিন্তু খেয়াল করলে দেখবেন  ‘আল্লাহ’ জিভ দিয়ে বেরোয় না। কারণ, এটা বাঙালির কাছে ট্যাবু হয়ে গেছে। বাঙালি ধর্মের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন না করলেও একে স্বীকারের আতংকে থাকে সারাক্ষণ, এই বুঝি প্রগতিশীলতার মুখোশটা খুলে পড়ে গেল! সমাজে মুখ দেখাবে কী করে সে? 

এ আতংক ও অস্বস্তি আসে Existential Crisis থেকে। বিশাল সংখ্যক বাঙালি এ সংকটে ভোগে। আমি নিজেও এককালে এ সংকটের ভেতর দিয়ে গিয়েছি। ধর্ম বিষয়ক আলাপ উঠলে বাঙালি আপসে সরে যায় কিংবা আলাপ পাল্টানোর চেষ্টা করে। গম্ভীর মুখে বলে- এটা যার যার ব্যক্তিগত বিষয়। কী বিচিত্র বাঙালির বুদ্ধি, ধর্মের মত সার্বজনীন একটা বিষয়কে বলে কীনা ব্যক্তিগত! 

ব্যক্তিগত বানাতে বানাতে বাঙালি ধর্মকে একতরফা গোপন প্রেমের মত এতই ব্যক্তিগত করে ফেলেছে যে, তার ধর্মপালন বিষয়ে সে ছাড়া আর কেউ জানেই না! নিজ ধর্ম নিয়ে এ হীনমন্যতা হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম সব ধরণের বাঙালির আছে। অথচ ধর্ম হচ্ছে যার যার একটা স্বাভাবিক অবস্থান, জীবন পরিচালনার গাইডলাইন। সেই ধর্ম এমন ভয়ানক ট্যাবু হয়ে গেছে যে- মসজিদের ইমামকেও সুদ-ঘুষ-দূর্নীতি, অন্যায় রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর কুফল ইত্যাদি নিয়ে কথা বলতে গেলে আগে চোখের কোণে দেখে নিতে হয় মসজিদের সেক্রেটারী, সভাপতি, থানার ওসি সাহেব ও এলাকার রাজনীতির হর্তা-কর্তারা নামাজ পড়তে এসেছে কীনা!

নানান প্রেক্ষাপটে ধর্মের এসব বিধি নিষেধ নিয়ে যুক্তিগ্রাহ্য আলাপে না ঢুকলে আখেরে আমাদেরই ক্ষতি। ধর্ম বিষয়ক যৌক্তিক আলাপ, নিজের অবস্থান এবং নিজ ধর্মের প্রকৃতি ও চিহ্নের গুরুত্ব বোঝার চেষ্টা বাঙালির নেই বলে হৃদয় মন্ডলের সাথে অজ্ঞতাপূর্ণ আলাপ আরম্ভ করে সারাদেশেই একটা অস্বস্তি তৈরি করেছিল কিছু শিক্ষার্থী। আবার এর কিছুদিনের মধ্যেই স্কুল ড্রেসের ঘটনাকে হিজাব বিতর্ক হিসেবে উপস্থাপন করে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে কিছু শিক্ষার্থী। 

মানুষ এসব বিতর্ক তৈরি করে, কারণ যথার্থ জ্ঞানটা নেই ধর্মের। নিজ স্বার্থে কাউকে হেনস্থা করার চেষ্টা কত বড় গুনাহ এটা শিক্ষার্থীরা জানে বলে মনে হয় না। এই না জানাটা তৈরি হয় ধর্মকে ট্যাবু করে তোলার কারণে। যেমন খেয়াল করে দেখবেন, হৃদয় মণ্ডলের সাথে ছাত্ররা আলাপের এক পর্যায়ে বলে, আরিফ আজাদের প্যারাডক্সিকাল সাজিদ পড়ে দেখার জন্যে। এর কারণটা কী? কারণ ছাত্ররা বিতর্ক তৈরি করতে চেয়েছে। এটাই ছিল তাদের স্বার্থ।

তারা যদি আন্তরিকভাবেই ধর্ম বিষয়ক আলাপ করতে চাইত তাহলে তারা আরিফ আজাদ ভাইয়ের অন্য বইগুলোর কথা বলতে পারত। বলতে পারত- ‘বেলা ফুরাবার আগে’ বা ‘যেমন যেখানে যেমন’ বইয়ের কথা।  এ বইগুলো ধর্মের সৌন্দর্য নিয়ে আলাপ করে, গল্প বলে। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ‘বেলা ফুরাবার আগে’ বা ‘জীবন যেখানে যেমন’ বইগুলো যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক। কিন্তু এসব নিয়ে আলাপ না করে প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ নিয়ে আলাপ কেন করতে গেল ছাত্ররা? কারণ, আমি উপলব্ধি করি, ধর্মের সত্যিকারের এসেন্স ওই ছাত্ররা ধারণ করে না। তারা ধর্মচর্চা বা ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান অর্জনে অনাগ্রহী। তারা আগ্রহী একটা চমকে ভর করে অপর পক্ষকে দেখাতে- দেখো, আমরাই সেরা। কিন্তু সত্যিকার অর্থে ধর্মচর্চা বা ধর্মের জ্ঞান অর্জন এদের উদ্দেশ্য কখনোই নয়। কারণ? ধর্মচর্চা বা ধর্মের জ্ঞান অর্জন বাঙালি সমাজে ট্যাবু। এর ফলে এ সমাজের আলাপে প্যারাডক্সিকাল সাজিদ এক্সেস পেলেও ‘বেলা ফুরাবার আগে’ বা ‘জীবন যেখানে যেমন’ এক্সেস পায় না।

বইয়ের কথা যখন আসল তখন বলি, আমি বেশ কৌতুকের সাথে খেয়াল করেছি আরিফ আজাদ, শামসুল আরেফীন, রাফান আহমেদ ভাইদের বইগুলো বাঙালির জন্যে ট্যাবু। পড়ে দেখাতো দূরে থাক, এসবের নামও নিতে চায় না সাহিত্য প্রিয় বাঙালিরা। যদি অন্যে ক্ষ্যাত ভাবে? সামগ্রিকভাবে, ধর্ম বিষয়ে জানা ও উপলব্ধির সব রাস্তা বন্ধ করে বাঙালি আত্মপরিচয়কে অস্বীকার করতে চায় একে ট্যাবু বানিয়ে। 

ধর্মকে ট্যাবু বানিয়ে রাখার কুফল হিসেবে এপ্রিল, ২০২২ এ নিউমার্কেটের সংঘর্ষের ঘটনাকে উল্লেখ করতে চাই আমি। ঘটনার সূত্রপাত যারা করেছে এবং নীরিহ মানুষকে যারা প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে এদের উভয়ের জীবন-যাপনে দেখবেন ধর্মের স্পেস অলমোস্ট জিরো। ধর্ম বিষয়ে এদের আলাপ নেই তাই এদের ভেতর সহনশীলতার চর্চা নেই, সুস্থ আলাপে আগ্রহ নেই। এদের আগ্রহ কেবল ক্ষমতা দেখিয়ে স্বার্থ উদ্ধারে। 

যদি ধর্মকে ট্যাবু করে তোলা না হত তাহলে এরা জানত- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

“আমার উম্মতের মধ্যে (আসল) নিঃস্ব তো হচ্ছে সেই ব্যক্তি, যে কিয়ামতের দিন অনেক নামায, রোযা ও যাকাতের (নেকী) নিয়ে হাজির হবে। কিন্তু এর সাথে সে এমন অবস্থায় আসবে যে, সে কাউকে গালি দিয়েছে। কারো প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করেছে, কারো মাল (অবৈধভাবে) ভক্ষণ করেছে। কারো রক্তপাত করেছে এবং কাউকে মেরেছে। অতঃপর অমুক (অত্যাচারিত) কে তার নেকী দেওয়া হবে, অমুক (অত্যাচারিত) কে তার নেকী দেওয়া হবে। পরিশেষে যদি তার নেকীরাশি অন্যান্যদের দাবী পূরণ করার পূর্বেই শেষ হয়ে যায়, তাহলে তাদের পাপরাশি নিয়ে তার উপর চাপানো হবে। অতঃপর (অন্যদের পাপের বোঝার কারণে) তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।”

[সহীহ মুসলিমঃ ২৫৮১; তিরমিযীঃ ২৪১৮; মুসনাদে আহমাদঃ ৭৯৬৯]

আর পুরো গণ্ডগোলটা চলেছে রোজার সময়ে। অথচ রোজার সময় মানুষকে কষ্ট দেয়া ভয়ানক পাপ। এমনকি প্রয়োজনেও রক্তপাত, হানাহানি নিষিদ্ধ এ মাসে। যারা ঝামেলা তৈরি করেছে তাদের জন্যে প্রায় পুরো ঢাকা শহরের মানুষ যানজটে কষ্ট করেছে। অনেকের আয়-উপার্জন বন্ধ ছিল। কিন্তু এসবকে অন্যায় হিসেবে দেখেনি কেন ঝামেলাবাজেরা? কারণ, ধর্মীয় আলাপ-বিধি-নিষেধ একটা ট্যাবু হয়ে গেছে। এসব বিষয়ে তারা শুনতেও রাজি নয়। মানাতো পরের কথা।

এ ট্যাবুটা ভাঙতে কী করা যায়?

কয়েকটা কাজ আমরা করতে পারি- 

এক, যুক্তিগ্রাহ্য আলাপ করতে হবে। আলাপ জারি রাখতে হবে। আলাপে একমত না হতে পারলে মারকাট না করে পড়াশুনা করতে হবে আরো জানতে।

দুই, সাহিত্যে-লেখায়-বলায় নিজ উপলব্ধিমত ধর্মবিশ্বাসটাকে তুলে আনতে হবে অনেক বেশি। বারবার আলাপ করে মনন রুচি তৈরি করতে হবে। নিজের মনন রুচি বারবার ভাঙতে হবে, নতুন নতুন তথ্যে সমৃদ্ধ করতে হবে নিজেকে। নতুন আলোয় বারবার দেখার চেষ্টা করতে হবে নিজ বোধকে। উপস্থাপন করতে হবে নিজ বিশ্বাসকে দৃঢ় প্রত্যয়ে। কিন্তু এ উপস্থাপন, এ প্রকাশ যেন আরোপিত মনে না হয়।

তিন, প্রাচ্যবাদী মননের প্রভাবেই ধর্ম নিয়ে আলাপে আগ্রহী নয় মানুষ। এর এন্টিডোট হিসেবে পাশ্চাত্যবাদ নিয়ে আলাপ করতে হবে। এর ধরণ ও প্রেক্ষাপট জানার চেষ্টা করতে হবে।

ফেসবুকেও এসব আলাপ চলতে পারে। আমার বন্ধু তালিকার অনেকেই এমন আলাপ করতে চেষ্টা করেন। আমি দেখেছি অন্যকেও তারা আমন্ত্রণ করেন আলাপে। তাদের আলাপগুলো  সুযোগ হলেই আমি মনোযোগ দিয়ে দেখার চেষ্টা করি। এরকম অনেকেই আছেন। এনাদের অনেক আলাপের সাথেই আমি তীব্রভাবে দ্বিমত করি। কিন্তু এরপরও উপলব্ধি করি, তারা নিজেদের আবিষ্কার করে চলেছেন অনবরত। এ আবিষ্কার করে চলাটা নিজেকে প্রতিনিয়ত ভাঙচূরের মত। ওনারা নতুন কোন আইডিওলজি উপস্থাপন করছেন না বরং নিজ বুঝ বা জ্ঞানে সত্য তাদের চোখে যেভাবে ধরা দিচ্ছে সেভাবেই আলাপ করে যাচ্ছেন নিরলস। এভাবে তারা ধর্ম বিষয়ক ট্যাবুটা ভাঙার চেষ্টা করছেন। আমি মনে করি, এটা জরুরি। তাই নিজ ধর্ম বিষয়ে পড়ুন, জানুন ও প্রাণ খুলে দ্বিধা ঝেড়ে আলাপ করুন।

এতে করে দুটো জিনিস হবে- এক, অজ্ঞতা ঝরে যাবে। দুই, সহনশীলতার সংস্কৃতি তৈরি হবে। আর হ্যাঁ, আলাপের মাধ্যমেই  কেবল এ ট্যাবুকে ভাঙা সম্ভব। নিজে আলাপ করবেন অন্যকেও আলাপ করতে দেবেন। এটুকুই যথেষ্ট।

Comments